উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জে এযেন যমালয়ে জীবন্ত মানুষের কাহিনী


রবিবার,০৭/০৬/২০১৫
575

বিকাশ সাহাঃ    এযেন আজব দেশের আজব কাহিনী। যা শুনলে চমকে আঁতকে উঠবে যে কেউ। হাঁ অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি।  এমন এক ঘটনা ঘটল উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জে। যার চলে যাওয়ার কথা স্বর্গে, সে নতুন ভাবে পুনর্জন্ম পেল, যমালয়ে জীবন্ত মানুষের মতো। এমনই অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটল কালিয়াগঞ্জের হাসপাতাল পাড়া এলাকার নতুন পাড়ার বাসিন্দা ভবেশ দাসের (৬৩) জীবনে। ভবেশ বাবু শনিবার রাত থেকে নিজের ঘরেই দরজা বন্ধ অবস্থায় প্রায় ২৪ ঘণ্টা অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে ছিলেন। বিহারের কাটিহারের বাসিন্দা ভবেশ বাবু দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এই টিনের চালওয়ালা ছাপরা বাড়িতে একাই থাকতেন। তিনি অবসরপ্রাপ্ত কৃষি ও সেচ বিভাগের কর্মী।  তাঁর স্ত্রী পদ্মরানী দাস, বিহারের এক স্কুলের শিক্ষিকা। মেয়ে মৌমিতা দাস শিলিগুড়িতে এমবিএ করছেন। কালিয়াগঞ্জের নতুন পাড়ার বাড়িতে ভবেশ বাবু দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে একাই থাকতেন। দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত ভবেশ বাবুর এই বাড়িতে তাঁর মেয়ে, স্ত্রী, এমনকি কোনও আত্মীয়কে আসতে দেখেননি এলাকাবাসীরা। ফলে পাড়া প্রতিবেশিরা মাঝে মধ্যেই তাঁর দেখাশুনা করতেন। প্রতিদিনের মতই শুক্রবার রাত ৯ টা নাগাত তিনি নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন। ঘরে নেই কোনও জানালা, নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। শনিবার সকাল ১১ পর্যন্ত ভবেশ বাবু ঘর থেকে না বের হওয়ায় তাঁর পাশের বাড়ির গৃহবধূ অর্পণা মোদক তাঁকে ডাকাডাকি করেন, কিন্তু কোনও সারা পাননি। ফের আবার সন্ধার দিকে ডাকাডাকি শুরু করলে আশেপাশের লোকজন জড় হয়ে যায়। ঘরের ভিতর থেকে কোনও উত্তর না আসায় স্থানীয় বাসিন্দারা কালিয়াগঞ্জ থানায় খবর দেয়। কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশের উপস্থিতিতে ঘরের দরজা ভেঙ্গে দেখা যায় বিবস্ত্র অবস্থায় বিছানার উপর পড়ে রয়েছেন ভবেশ বাবু। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারনা ভবেশ দাসের মৃত্যু হয়েছে। সেই মতো পুলিশ ভবেশ দাসকে কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগে ভবেশ বাবুর ছবি তোলার জন্য ক্যামেরাম্যানকে সঙ্গে নিয়ে আবার ঘরে ঢোকে। কালিয়াগঞ্জ থানার সাব ইন্সপেক্টর মানিক গোস্বামী ঘরে ঢুকে দেখে ঘরে কেউ নেই। ঘরের চারিদিকে খোঁজাখুঁজি করে নিরাশ হয়ে ঐ পুলিশ অফিসার ঘর থেকে বের হবেন, এমন সময় দরজার দিকে নজর যেতেই দরজার আড়ালে বিবস্ত্র অবস্থায় ভবেশ দাসকে দেখে আঁতকে ওঠেন ঐ পুলিশ অফিসার। ভুতের আতঙ্কে পালাতে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে অনেকে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকজন স্থানীয় মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে সাব ইন্সপেক্টর মানিক গোস্বামীও অসুস্থবোধ করায় স্থানীয় লোকজন অফিসারের সেবাশুশ্রূষা করেন। বাইরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দেখা যায় ঘরের ভিতর মেঝেতে ভবেশ বাবু অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় পুলিশ, ভবেশ বাবুকে কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিন রবিবার সকালে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে মেয়ের হাত ধরে শিলিগুড়িতে পাড়ি দেন ভবেশ বাবু। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে “বাঞ্ছারামের বাগান” ও ভবেশ বাবুর কাহিনীর মধ্যে মিল খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট