এক যৌন কর্মীর সত্যি কথা !

 খবরইন্ডিয়াঅনলাইনঃ   মানুষ আমাকে মনে করে আমি খুব শক্ত মেয়ে। কিন্তু মানুষ জানে না ভেতরে ভেতরে আমি ভেঙে খান খান হয়ে যাচ্ছি। আমি গোপনে অশ্রু ফেলি, কিন্তু কাউকে আমি আমার কান্না দেখাতে চাই না’। কথাগুলো বললেন সুনারশি। ইন্দোনেশিয়ার এক নারী।

এটা অবশ্য তার আসল নাম নয়। ১৫ বছর আগে। সুনারশির বয়স তখন ১৭। খুব গরিব ঘরের মেয়ে। স্কুলের ফি দেয়ার মত কোন টাকা না থাকায় এক সময় স্কুলের গন্ডি আর পেরুতে পারলেন না। সেই সময় তার চিন্তা এলো বিদেশে যাবার। অভিবাসী শ্রমিকদের নানা সাফল্যের কথা শুনে তিনিও সিদ্ধান্ত নিলেন এই কাজ করবেন। চলে গেলেন একটি প্রশিক্ষণ কোম্পানিতে। সেখানে গিয়ে গৃহকর্মের প্রশিক্ষণ নিলেন। সংগ্রহ করলেন পাসপোর্ট।

একদিন ঐ কোম্পানি জানালো এক আরব তার বাসার কাজের জন্য এমন একজনকে খুঁজছেন যে হবে একজন কুমারী, বাদামী বর্ণের গায়ের রং, লম্বা। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সুনারশি বললেন: ‘আমি অন্য আরও অনেকের সঙ্গে এই চাকুরির জন্য তালিকাভুক্ত হলাম। তারপর আমাদের নেয়া হলো ইন্টারভ্যু। একশ মেয়ের মধ্যে আমাকে পছন্দ করা হলো। আমার বন্ধুরা আমার নির্বাচিত হওয়ায় ঈর্ষান্বিত হল! নির্বাচিত হবার দুই সপ্তাহ পর আমাকে এক আরব নিয়ে গেলেন, তার বাড়িতে, সৌদি আরবে।

এখান থেকেই শুরু হলো দু:স্বপ্নের। আমাকে যে ব্যক্তি তার বাড়িতে নিয়ে গেলেন, সে আমার আসল নিয়োগকর্তা নয়। আসল নিয়োগকর্তা তার পক্ষাঘাতগ্রন্থ বাবা। তার শরীরের নিম্নাংশ অবশ। সেই বৃদ্ধ আমাকে বললো ভাইব্রেটরের সাহায্যে তার পুরুষাঙ্গে মালিশ করতে। আমি বললাম, না। আমি পারবো না।

ক্ষেপে গেলো ঐ ব্যক্তি৷ নানা ভয়ভীতি দেখালো। তাকে ঐ বাড়িতেই বন্দি করে রাখা হলো।

কেবল ঐ ব্যক্তিই নয়, তার নয় পুত্রও পালাক্রমে তাকে দিয়ে মালিশ করাতো। করতো নানা যৌন অত্যাচার। এর পাশাপাশি তাকে রান্নাও করতে হতো।

একদিন সুযোগ পাওয়া গেলো সেই বাড়ি থেকে পালানোর। ঘরের দরজার তালা লাগানো ছিল না। বাড়ির পিছনে দিয়ে পালানোর চেষ্টা করতেই ধরা পড়ে গেলো সে।
আসলে এটা ছিল একটি ফাঁদ। তাকে এবার বিক্রি করে দেয়া হলো ১৩০০ ডলারে।

‘আমি এবার কুমিরের মুখ থেকে পড়ে গেলাম সিংহের মুখের সামনে। নতুন এই ব্যক্তি আসলে একজন দালাল। যখন কোন খদ্দেরের মেয়ে প্রয়োজন হতো আমাকে পাঠিয়ে দেয়া হতো। আমি হলাম এক যৌনদাসী। এক বছরেরও বেশি সময় আমার উপর যৌন অত্যাচার চালানো হয়। আমার সঙ্গে পশুপাখির মতো ব্যবহার করা হতো। কিন্তু আমার জন্য প্রচুর অর্থ নিতো সেই দালাল,” বলেন সুনারশি।

এক সময় সৌদি পুলিশ তাকে আটক করে। ছয় মাস কারাভোগের পর মুক্তি পান সুনারশি। তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় নিজ দেশে। এখন সেই সুনারশির বয়স চল্লিশ। তিনি জানেন না তাঁর ভবিষ্যৎ!

ইউনিসেফের হিসাবে ইন্দোনেশিয়া থেকে পাচার হওয়া ১ লাখ নারী শিশু এখন যৌনদাসীর জীবন কাটাচ্ছে।

admin

Share
Published by
admin

Recent Posts

ভারত- চায়না বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের আলোচনায় অংশ নেবেন দোহাল

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোহাল আজ বেজিংয়ে, ভারত- চায়না বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের আলোচনায় অংশ নেবেন।…

4 days ago

ভারতীয় নাগরিকরা শ্রীলঙ্কায় বিনা শুল্কে ভিসা পাবেন

আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ভারতীয় নাগরিকরা শ্রীলঙ্কায় বিনা শুল্কে ভিসা পাবেন। ৩৯ টি দেশের…

4 days ago

তারা আর কোনো চাকরির পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকবে না

কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেছেন, ‘ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সী’- NTA, আগামী বছর থেকে শুধুমাত্র প্রতিযোগিতামূলক প্রবেশিকা…

4 days ago

গঙ্গাসাগর মেলার নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য সরকার বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে এবারের গঙ্গাসাগর মেলার নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য সরকার বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে।…

4 days ago

‘ব্যাম্বু মিশন’ অভিযানের কাজ এই রাজ্যে এগোয়নি :সুকান্ত

রাজ্য সরকারের উদাসীনতার কারণে ন্যাশনাল ‘ব্যাম্বু মিশন’ অভিযানের কাজ এই রাজ্যে এগোয়নি বলে কেন্দ্রীয় শিক্ষা…

4 days ago

বিনিয়োগ সংক্রান্ত উপদেশ দিতে চাইলে নিবন্ধিকৃত হতে হবে

সিকিউরিটিস এন্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া SEBI জানিয়েছে, কোনো ব্যক্তি বিনিয়োগ সংক্রান্ত উপদেশ দিতে চাইলে…

4 days ago