খবরইন্ডিয়াঅনলাইনঃ আমরা জানি পাহাড়ে রাণী হিমালয়ের কন্যাখ্যাত দেশ নেপালে ভূমিকম্পে প্রায় ৮০ লাখ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সংখ্যা দেশটির মোট জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগ। মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ।
আন্তর্জাতিক সহায়তা পৌঁছানো শুরু করেছে। তবে এখনো অনেক সহায়তা প্রয়োজন। প্রায় ১৪ লাখ লোকের জন্য খাদ্য সহায়তা দরকার। জাতিসংঘের বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শনিবার নেপালে ৭ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে রাজধানী কাঠমান্ডু ও পর্যটন শহর পোখারাসহ দেশটির প্রত্যন্ত অঞ্চল মারাত্মকভাবে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩১০ জনে। তবে নিহতের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। উদ্ধারাভিযানের যতই অগ্রগতি হচ্ছে, মরদেহের তালিকা ততই দীর্ঘ হচ্ছে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামগুলোতে উদ্ধারাভিযান চলছে। কাঠমান্ডুর ৪৪ কিলোমিটার দূরে যেখানে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়, সেখানে এবং তার আশপাশের এলাকায় নিহতের সংখ্যা অনেক বেশি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ওই সব এলাকায় উদ্ধারাভিযান শেষ হলে জানা যাবে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা।
কাঠমান্ডু ও আশপাশের অঞ্চলে থেকে থেকে ভূকম্পন (আফটার শক) অনুভূত হচ্ছে। এতে আরো ভীতসন্ত্রস্ত হচ্ছে লোকজন এবং তারা ঘরে ফিরে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না। তৃতীয় রাতের মতো খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে নেপালিরা। কাঠমান্ডু এখন তাবুর শহরে পরিণত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের পাশের খোলা জায়গায় তৈরি হয়েছে তাবুর আশ্রয় শিবির।
পানীয় জল, খাবার এবং বিদ্যুতের চরম অভাব দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞরা। সোমবার ইউনিসেফ বলেছিল, দেশটির কয়েক লাখ শিশু স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে। জরুরিভিত্তিতে তাদের জন্য সাহায্য প্রয়োজন।
জাতিসংঘের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৩৯টি জেলা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১১ জেলার ২ লাখ মানুষ চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে।
গোরখা জেলার কর্মকর্তা সূর্য মোহন অধিকারী জানিয়েছেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের ৯০ ভাগ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা তাদের ঘরবাড়ি ও জীবিকা নির্বাহের উপায় হারিয়েছে। খাদ্য জোগাড়ের কোনো সুযোগ তাদের হাতে নেই।
সূর্য মোহন অধিকারী আরো বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের দুর্গতদের কাছে পৌঁছানো খুবই কঠিন হচ্ছে। পাহাড়ি রাস্তায় ভূমিধসের কারণে কোনো যানবাহন পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না এবং এমনকি হেলিকপ্টার নামাতেও খুব সমস্যা হচ্ছে।