বাংলাদেশী পড়ুয়ারা বিপাকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে


মঙ্গলবার,২১/০৪/২০১৫
804

খবরইন্ডিয়াঅনলাইনঃ       প্রতিবেশী ২টি দেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচিয়তা একজন তিনি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ভালবাসার টানে অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী তাই ছুটে আসে রবি ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতীতে। রবি ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত পশ্চিমবঙ্গের শান্তি নিকেতনে।

প্রতিষ্ঠানটির সূচনা লগ্ন থেকেই শৈলজারঞ্জন মজুমদারসহ অনেক বাংলাদেশির নাম এর সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। শৈলজারঞ্জন মজুমদার ১৯৩২ সালে রসায়ন শাস্ত্রের অধ্যাপক হিসেবে শান্তি নিকেতনে যোগ দিয়েছিলেন।

বর্তমানে প্রায় অর্ধশতাধিক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যয়নরত আছেন। যাদের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী রয়েছেন শান্তিনিকেতনের কলা ভবন ও সঙ্গীত ভবনে। এদের কেউ কেউ ক্যাম্পাসের কাছেই বাসা ভাড়া করে থাকছেন আবার অনেকে থাকছেন বিশ্ববিদ্যালয় হোস্টেলে। সব মিলিয়ে দুই বাংলার মিলন মেলা হয়ে উঠেছে শান্তি নিকেতন।

বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় এখানে ‘বাংলাদেশ ভবন’ নির্মাণের কথা রয়েছে। শান্তিনিকেতনে আসার পেছনে কবিপ্রেম যেমন রয়েছে তেমনি এর অন্য একটি কারণ হল স্বল্প দূরত্ব। বাংলাদেশ থেকে কাছাকাছি অবস্থান হওয়ায় শান্তি নিকেতন তাই অনেক শিক্ষার্থীর প্রথম পছন্দ। ঢাকা থেকে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে সড়ক যোগে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পৌঁছানো সম্ভব।

তবে মাত্র একদিনে ঢাকা থেকে শান্তি নিকেতনে পৌঁছানো সম্ভব হলেও শান্তি নিকেতন থেকে ঢাকা পৌঁছাতে বর্তমানে একজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সময় লাগছে কখনো কখনো এক সপ্তাহের বেশী! এমন প্রশাসনিক জটিলতায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শান্তিনিকেতনে অবস্থানরত বাংলাদেশিসহ অন্যান্য বিদেশি শিক্ষার্থীদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলাভবনের একজন শিক্ষার্থী জানায়, কিছুদিন আগে তার এক সহপাঠীর বাবা মারা গেলেও স্বদেশে ফেরার অনুমতি পেতে তার ৩দিন সময় লেগে যায়। তবে একবছর আগেও এত জটিলতা ছিলনা।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী একজন বিদেশী শিক্ষার্থীকে বাড়ি ফিরতে হলে তাকে প্রথমে ফরেন স্টুডেন্ট অ্যাডভাইজারের অফিস থেকে ফর্ম তুলতে হবে। ফর্ম পূরণ করার পর সেটা বিভাগীয় প্রধান, প্রিন্সিপাল, ফরেন স্টুডেন্ট অ্যাডভাইজার এবং লোকাল থানা থেকে সত্যায়িত করে জমা দিতে হবে প্রায় ৫০ কি.মি দূরে অবস্থিত ডি.আই.বি অফিসে। সেখান থেকেই মিলবে বাড়ি ফেরার অনুমতি।

এর মাঝে লোকাল থানা থেকে লিখিয়ে নিতে হবে তার নামে কোন ওয়ারেন্ট নেই! তবে সব থেকে বড় দুর্ভোগের বিষয় হচ্ছে কোন অফিসেই চট জলদি কাজ হচ্ছে না। কেউ জরুরি মিটিংয়ে থাকছেন, কারো অফিসের বাইরে ডিউটি থাকছে। শুধুমাত্র একটা সইয়ের জন্য শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, কখনো একদিন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দিল্লিতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা শান্তিনিকেতনে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের চেয়ে অনেক দূরে অবস্থান করেও কম সময়ে বাড়ি পৌঁছাতে পারছেন। এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্বভারতীর একজন শিক্ষার্থী বললেন ‘বাড়ি ফেরার অনুমতির জন্য যে সময় লাগছে তার থেকে কম সময়ে ভারতে আসার ভিসা পাওয়া সম্ভব। ভারতীয় শিক্ষার্থীরা এই সময়ে একবার বাড়ি থেকে ঘুরে আসতে পারে’।

এখানেই যদি শেষ হত তবু কথা ছিল। দেশ থেকে ফেরার পর আরো একটি ফর্ম পূরণ করে সেটি দুই জায়গায় সত্যায়িত করে জমা দিতে হচ্ছে বিশ্বভারতীর বিদেশি শিক্ষার্থীদের। ফলে চাইলেই বাড়ি কাছে থাকা সত্ত্বেও দেশে ফিরতে পারছেন না তারা।  দেশের বাইরে পড়তে এসে এমন বিড়ম্বনায় অনেকেই হতাশ। এমতাবস্থায় শান্তিনিকেতনে অবস্থানরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মনে একটাই প্রশ্ন বিশ্বভারতীতে পড়তে আসাই কি তাদের একমাত্র অপরাধ?

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট