ঋতুরাজ বসন্তের বিদায়লগ্ন। নীলদিগন্তে ফুলের আগুন এখন স্তিমিতপ্রায়। কোকিলের বিলীয়মান কুহতানে, প্রজাপতির রঙবাহারী বর্ণচ্ছটায় মধুমক্ষিকাদের গুঞ্জরণে অনুরণিত হয়েছে প্রাণ। বসন্তসখা তার পুষ্পবানে শরবিদ্ধ করেছে মণকে। আবার দক্ষিণা বাতাসে শাখা – প্রশাখায় এখন নবকিশলয়ের আন্দোলনে আহ্বান জানায় প্রকৃতি গ্রীষ্মকে। প্রকৃতির এই অপরূপ পরিবেশে মনের অন্তরে হৃদয়কে করে তুলে নব বর্ষের আগমণ বার্তা। বাঙালীর বারো মাসে তেরো পার্বণ। সেই পার্বণের শেষ ও শুরু বছরের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তি এবং ১লা বৈশাখ। পয়লা বৈশাখ এমনই একটা দিন, যা সারা দেশের বাঙালীদের মনে একটা নতুন আনন্দ ও উদ্যোগ এনে দেয়। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ -এর পাহাড় থেকে সাগর যেখানেই বাঙালী সেখানেই নতুন বছরের আগমণে নতুন পোষাকে, ভালোমন্দ খাওয়া দাওয়া, বেড়ানোর আনন্দে ভরে ওঠে। চৈত্র সংক্রান্তি মানে গাজন উৎসব। এই উৎসব গ্রাম বাংলার জনজীবনে এক নতুন মাত্রা। আরো কয়েকটি উৎসবের সঙ্গে এর ফারাক রয়েছে অনেক। তিন দিন ধরে উপোষ করে এক কাপড়ে থাকতে হয়। ‘ দণ্ডিকাটা ‘ এর আগের দিন রাত গাজন সেদিন সমস্ত ভক্ত নদীতে বা পুকুরে স্নান করে শিব মন্দিরে আসেন। আবার আগুন সেবা খাটার পর ফলমিষ্টি আহার করে ভোরে আগুন সন্যাস হয় অর্থাৎ আগুনের উপর দিয়ে হেঁটে যেতে হয় ভক্তদের। এরপর বিকেলে ‘ দণ্ডিকাটা ‘ বা প্রনাম সেবা শেষে শরবৎ, ফলমিষ্টি আহার এবং পরের দিন ‘ আঁশপান্না ‘ অর্থাৎ মাছভাত খেয়ে ভক্তরা যে যার বাড়ী ফিরে যায়। ‘ প্রনাম সেবা ‘ কে পাটে উঠা পরবও বলা হয়। এই মেলা দেখতে হলে বাঁকুড়ায় গেলে খুব আনন্দ পাবেন। বাংলা নববর্ষ বাঙালীর বছরের প্রথম বড় উৎসব। এই উৎসবে সবচেয়ে বেশী মেতে ওঠেন ব্যবসায়ীরা। এইদিন সকাল থেকে মন্দিরে গিয়ে ভক্তরা, ব্যবসায়ীরা ‘ হালখাতা ‘ আবার কেউও মন্দিরে পূজো দেন মঙ্গল কামনায়। বাড়ীতে নানা রকম ভালোমন্দ খাবার, তারপর খুরতে যাওয়া চারিদিকে হৈচৈ পড়ে যায় এই শুভ দিনটিতে। আপামর বাঙালীর কাছে আনন্দ দায়ক হয়ে ওঠে। আমরা খবরইন্ডিঅনলাইন পত্রিকার পক্ষ থেকে বাংলা ১৪২২ সালকে আহ্বান জানাই, সাথে জানাই সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন নতুন বছরে সবার মনের আশা পূরণ হোক।
স্বাগত – ১৪২২
মঙ্গলবার,১৪/০৪/২০১৫
1233