ডার্বিতে চার বছর বাদে জয়ের হাসি দেখল সবুজ মেরুন শিবির


সোমবার,৩০/০৩/২০১৫
747

মোহনবাগান – ১ ইস্টবেঙ্গল – ০
( বলবন্ত )
পূর্ণেন্দু চক্রবর্তীঃ দিনে ষোলো ঘন্টা পড়াশোনা করে পরীক্ষায় উত্তীন হওয়ার মতোনই ঘটনাটা ঘটে গেলো শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের ডার্বি ম্যাচে। ইস্টবেঙ্গল খেললো আর নোহনবাগান জয় পেল। ভাগ্য যদি কথা বলে, তবে কেউই সেখানে বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না। তার উদাহরণ এদিনের ডার্বি ম্যাচে মোহনবাগানের ১ – ০ গোলে জয় ইস্টবেঙ্গলে বিরুদ্ধে। টানা ম্যাচ অপরাজিত থেকে আইলিগ ফুটবলের লিগ টেবলে শীষেই থেকে গেলো মোহনবাগান। কোচ সঞ্জয় সেনের আবির্ভাবেই মোহন শিবিরে বসন্তের ছোঁয়া লেগেছিল। সেই বসন্তের হাওয়ায় সমর্থকরা ক্রমেই উদ্বেল হয়ে উঠছেন। জয় দেখাটা তাদের কাছে এখন অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। কে বলবে মোহনবাগানের ভাঙা একটা রক্ষণভাগকে নিয়ে এইভাবে একটা ম্যাচে জয় তুলে নেওয়া সম্ভব। তাও আবার ইস্টবেঙ্গল। চিরদিনই ডার্বি ম্যাচের মোহনবাগান জয়ের হাসি দেখলো। আর তাইতো কোচ সঞ্চয় সেনের মুখ দিয়ে একটা কথাই প্রকাশ পেতে পারে দল আইলিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য ক্রমেই দৃঢ় পদক্ষেপ রাখছে। তবে সামনে অনেক ঢেউয়ের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। ঘরের মাঠে কাটসুমি, সোনি নোদিরা বেশিরভাগ ম্যাচই খেলে ফেলেছেন। অ্যাওয়ে ম্যাচে মোহনবাগানের কাছে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী বেঙ্গালুরু। এখন থেকেই বেঙ্গালুরু দল মোহনবাগানের দরজায় টোকা মারছে। তাই সাবধানে পা ফেলতে হবে মোহনবাগানের ফুটবলারদের একবার যদি পা পিছলে যায় তাহলে বিপদের সংকেত গাঢ় হয়ে উঠবে। সেই কারণে খেলার শেষে কোচ সঞ্চয় সেন বলেছেন, জয়ের হাসি দেখতে কার না ভালো লাগে। তবে আইলিগের ম্যারাথন দৌড়ে একেবারে টাচ পয়েন্টে গিয়েও অনেক সময় হোঁচট খেতে হয়। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে কোচ এলকোর কাছে জয় অধরাই থেকে গেলো। শেষ কবে ভাঙা মোহনবাগান দলকে ইস্টবেঙ্গল পেয়েছিল তার ইতিহাস জানা নেই। খেলার শুর থেকেই এলকো দলকে নির্দেশ দিয়েছিলেন গো অ্যান্ড ফাইট । দৌড়াও এবং গোল করো। কিন্তু কে গোল করবেন। কমপক্ষে চার চারটি সুযোগ পেয়েও ডুডু কপাল চাপড়িয়ে কোন কিছুই খুঁজে পাননি। উনি নিজেই হ্যাটট্রিক করে দলকে পুরো পয়েন্ট তুলে নিতে পারতেন। কেন জানি না গোলের কাছে গিয়ে এমনভাবে শট নিলেন যে গোলরক্ষক দেবজিত মজুমদারের হাতে গিয়ে পড়েছে। না হয় দক্ষতার সঙ্গে তা ফিরিয়ে দিয়ে ডুডুকে জানান দিয়েছেন গোল করা হবে না। সত্যি তাই হলো। রান্টিকে বল বাড়ানোর মতো মাঝমাঠে খেলোয়াড়কে জায়গা দিতে চাননি মোহনবাগানের দেবদাস ডেনসন বা কাটসুমিরা। আক্রমণে ঝাঁঝ অবশ্যই ইস্টবেঙ্গলের অনেক বেশি ছিল। কিন্তু আসল কাজটা করতে লাল হলুদ শিবিরের ফুটবলাররা ব্যথতার পাহাড় তৈরী করেছেন। আর অনবদ্য হয়ে উঠেছেন মোহনবাগানের গোলরক্ষক দেবজিত। খেলার শেষে হিরো অফ দ্য ম্যাচ সম্মানটা তাঁর জন্য তোলা ছিল। খেলার ৩০ মিনিটের মধ্যে পাঁচ পাঁচটি কর্নার পেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। তাতেও কোন কাজের কাজ হয়নি। মোহনবাগানের সোন নোদিকে এদিন ঘুমন্ত ফুটবলার বললেও খুব একটা ভুল হবে না। অপরদিকে ইস্টবেঙ্গলের তুলুঙ্গা বা রফিকরা অহেতুক দৌড়াদৌড় করে সময়কে নষ্ট করেছেন। তবুও প্রথম পর্বটা ইস্টবেঙ্গলের জন্য অবশ্যই তোলা থাকবে। অনেক সময় হতাশা থেকে জেদ বেড়ে যায়। তাকে হাতিয়ার করে অনেক সাফল্য দেখতে পাওয়া গেছে। ঠিক এদিনও মোহনবাগানের এই জয় হতাশার জ্বালাকে জাগ্রত করেছে। প্রতি আক্রমণে একটা সুযোগ থেকেই মোহনবাগান গোল করে বাজিমাত করলো। কাটসুমির চকিত একটা শটে ইস্টবেঙ্গলের গোলরক্ষক শুভাশিস রায়চৌধুরী কি যে থাপ্পড় মারলেন, ফিরতি বলে সুযোগ সন্ধানী বাজপাখির মতো ছুটে গিয়ে বলবন্ত সিং গোল করে নায়ক হয়ে গেলেন। ৪৬ মিনিটে এই গোল পরিশোধ করার মতো কোন সুবর্ণ সুযোগ তৈরী করা ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে সম্ভব হয়নি। কোচ এলকো বারবার সাইড লাইনে গিয়ে খেলোয়াড়দের নির্দেশ দিয়েছিলেন মাঠটাকে বড় করবার জন্য। কে কার কথা শোনে ? যে ফল কোচ সঞ্চয় সেন আাশা করেছিলেন তাতে তিনি সার্থক। আবার এলকো হতাশার জাল বুনতে বুনতে সাজঘরে ফিরে যাওয়া ছাড়া আর কোন পথ খুঁজে পাননি। তাইতো খেলার শেষে এলকোর একটাই কথা, পারলাম না। আর কোচ সঞ্চয় সেনের স্পষ্ট জবাব, দীর্ঘদিন ধরে একটা বেদনা আমাকে কুরে কুরে খাচ্ছিল। যেদিন ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাব আমাকে সরিয়ে এলকোকে নিয়ে এসেছিলেন কোচ হিসাবে সেদিন থেকেই আমার চ্যালেঞ্জ ছিল যদি কোন দিন প্রমাণ করার মতো জায়গায় পৌঁছাতে পারি তবে তার যোগ্য জবাবটা দিয়ে দেবো। আর সেই সময় মোহনবাগানের সমর্থকরা চিৎকার করে বলছেন, আইলিগ জিতবে কে ? মোহনবাগান আবার কে। সৌজন্যঃ দৈনিক স্টেটসম্যান

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট