মোল্লা শাহাজান বাদশা, বর্ধমানঃ আলু উৎপাদনে বাংলার অন্যতম জেলা হিসেবে বর্ধমান চিহৃত। ব্যাপক ফলন হওয়া সত্ত্বেও চাষীরা বর্তমানে একপ্রকার বাধ্য হয়ে বস্তা পিছু ৫০ টাকা অর্থাৎ কেজি প্রতি ১টাকা বিক্রি করছেন। অথচ বাজারে ক্রেতারা কিনছেন কেজি ৭ থেকে ৮ টাকা দরে। আলু চাষীরা বস্তায় নূন্যতম ২৫০ টাকা দাম পেলে চাষাবাদের খরচটুকু পেতেন। সরকারের আলু কেনার গালভরা প্রতিশ্রুতি এখনও পৌঁছাইনি চাষীদের কাছে। হিমঘরে আলু রাখতে না পেরে অনেক চাষী মাঠেই রেখে দিয়েছেন। পচনের হাত থেকে বাঁচাতে তাই ১ টাকা কেজি দরে চলছে আলু বিক্রি। এই পরিস্থিতির মধ্যে চলতি মাসে পাঁচ ছয় জন আলুচাষী আত্ন হননের পথ বেছে নিয়েছেন। সরকার -এর পক্ষ থেকে আলুর দাম বিষয়টি অস্বীকার করে পারিবারিক বিবাদ ত্বত্ত-কে ব্যথতা ঢাকার জন্য প্রতিষ্ঠা করছেন বলে কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় দাবী রেখেছেন। পারিবারিক বিবাদের অন্তরালে মূলত কারণ থাকে অর্থনৈতিক। অনেক চাষী জমি-জায়গা-গহনা বন্ধক দিয়ে মহাজনদের কাজ থেকে ধার নেন। সেই ঋণের অংক প্রতিনিয়ত বেড়ে চলে। যেখানে চাষের খরচ আলুর দাম উঠেনা, সেখানে অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে পারিবারিক বিবাদ আসবেই।এই রূপ মনে করে গ্রাম বাংলার চাষী পরিবার। গত সপ্তাহে ভাতারের ছাতিনউদ্ধার গুড়ু মুমু, মঙ্গলকোটের পালিগ্রামে সঞ্জয় মণ্ডল বিষ খেয়ে আত্নঘাতী হয়েছেন। গত মঙ্গলবার গলসী থানার মোহনপুর গ্রামের গণেশ সরেন ( ২৫ ) বিষ খেয়ে আত্নঘাতী হন। অপরদিকে বাঁকুড়ার কোতলপুরের চাষী পরিবারের গৃহবধু মঙ্গলা রায় ( ৪০ ) আলুর লোকশানের জন্য অগ্নিদগ্ধ হন। মঙ্গলবার সকালে বর্ধমানে সদর মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হয়ে মারা যান। মঙ্গলকোটের বাম বিধায়ক শাহজাহান চৌধুরী গত শুক্রবার ফ্যাক্স করে কৃষি মন্ত্রী-কে নিহত আলু চাষী পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি বস্তা পিছু ৮০০ টাকা করে সরকারকে কেনবার আর্জি রেখেছেন। মঙ্গলকোটের বিডিও সুশান্ত মণ্ডল জানান – প্রতিটি পঞ্চায়েত কে উদ্বৃত্ত আলু বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আত্নঘাতী আলুচাষীদের সংঘ্যা বাড়ছে বর্ধমানে
বৃহস্পতিবার,২৬/০৩/২০১৫
743