রবিকে আজও খুশি করে


রবিবার,১৫/০৩/২০১৫
705

পূর্ণেন্দু চক্রবর্তীঃ মুম্বই শহর। ঝকঝকে রাজপথে অনেক গাড়ি ছুটে চলেছে। ব্যস্ততা আর ব্যস্ততা। বোধহয় সময়কে হার মানাতে চায়। কাজের তাগিদে কারোর কোন দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। কিন্তু মাঝে মধ্যে অনেক অডি গাড়ির মধ্যে একটি গাড়িকে দেখলে থমকে যান চলমান কোনও মানুষ। অবাক চোখে ফিরে যান তিনি তিরিশ বছর আগে। ১৯৮৫ সাল ১০মার্চ। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোন স্টেডিয়ামে। বেনসন অ্যাণ্ড হেজেস কাপের ক্রিকেট ফাইনাল। সুনীল গাভাসকারের নেতৃত্বে ভারতীয় ক্রিকেট দল মুখোমুখি চিরপ্রতিদ্বন্ধ্বী পাকিস্তান। চরম উত্তেজনা। স্নায়ুযুদ্ধে কোন দল বাজিমাত করবে তা নিয়ে বিতর্কের ঝড় সারা দুনিয়া তোলপাড় করেছিল। ১৯৮৩ সালে কপিলদেবের অধিনায়কত্বে প্রথম বিশ্বকাপ জেতার আনন্দ ভরপুর। আত্নবিশ্বাসে টগবগ করে ফুটছে পুরো দলটা। ভিনদেশের বেশ কিছু তাবড় তাবড় ক্রিকেটারদের সঙ্গে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা ভারতের এই জয়কে ‘ ফ্লুক ‘ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। তাই বেনসন অ্যাণ্ড হেজেস কাপ ক্রিকেট ফাইনাল খেলাটি ছিল ভারতের কাছে চ্যালেঞ্জ। আর ভ্রান্ত ধারনাকে নস্যাৎ করা। ক্রিকেট ইতিহাসে জবাব দেওয়ার অধ্যায়। শিহরণ কাকে বলে! স্বাধীনতার যুদ্ধে যেন ঝাঁপিয়ে পড়া। সংগ্রামী ভারতীয় ক্রিকেট দল। সবাই সংঘবদ্ধ। ম্যাচ জেতা ছাড়া আর কোনও কথা নেই। বুক চিতিয়ে খেলতে হবে। রণং দেহি মনোভাব। প্রতিটা মুহূর্ত লড়াই আর লড়াই। ম্যাচ শুরু। টসে জিতে পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। স্টেডিয়ামে কোনও জায়গা ফাঁকা নেই। সম্মুখ সমরে যেখানে পাকিস্তান, সেখানে ভারতীয় দলে প্রত্যয় ছিল অন্য। শুরু থেকেই ভারতীয় বোলারদের চমক। মাত্র ৩৩ রানের মধ্যে চারটি উইকেট পড়ে গেল পাকিস্তান দলের। দিশেহারা পাকিস্তান। পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচে পাকিস্তান ১৭৬ রান করে ৯ উইকেট হারিয়ে। ভারতীয় বোলারদের চাপে নতজানু পাকিস্তান দল। কোনও ক্রিকেটার পঞ্চাশ রান করার সুযোগ পেলেন না ভারতীয় দুরন্ত বোলারদের সামনে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য ভারতের টার্গেট ১৭৭ রান। পাকিস্তানের বোলারদের উড়িয়ে দিয়ে ভারতীয় দল ৪৭.১ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রান করে খেতাব তুলে নিল। ওই ঐতিহাসিক জয়ের নায়ক হলেন রবি শাস্ত্রী। ছু রানে অপরাজিত থেকে ম্যান অব দ্য সিরিজের সম্মানটা তুলে দেওয়া হল রবি শাস্ত্রীকে। পেলেন সিলভার অডি ১০০ গাড়ি। রবি শাস্ত্রীর হাতে চাবি আসতেই উল্লসিত সকল ভারতীয় ক্রিকেটররা, কে কোথায় বসবে তা নিয়ে হুল্লোড় পড়ে গিয়েছিল। ওই গাড়িতেই ভারতীয় দল সারা মাঠ প্রদক্ষিণ করেছিল অভিনন্দনবার্তা ছড়িয়ে দিতে। সেই অডি গাড়িটা রবি শাস্ত্রীর কাছে সম্মানের। তাই কোনভাবেই গাড়িটা হাতছাড়া করতে রাজি নন। গ্যারেজে পড়ে মরচে পড়ুক তা চান না বলেই বলিউডের কোন চিত্রতারকা চাইলে গাড়িটার চাবিটা তুলে দেন, আর শহরে পথে ওই গাড়িটা দেখলে মুম্বইবাসীর কেউ কেউ বলে ওঠেন, ওই রবি শাস্ত্রী যাচ্ছেন, এমনই পরিচয়বার্তা রবি শাস্ত্রীকে খুশি করে।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট