সিউড়ীর যৌনপল্লি থেকে বাংলাদেশী গ্রেপ্তার, প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ


মঙ্গলবার,১৭/০২/২০১৫
875

খায়রুল আনাম, বোলপুর, বীরভূমঃ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সিউড়ী রেল স্টেশনে যৌনপল্লি থেকে দুই বাংলাদেশীকে গ্রেপ্তার করলো পুলিশ। ধৃত ইউনুস দফাদার রুপা বিবি সেখানে স্বামী – স্ত্রী পরিচয় দিয়ে থাকছিল এবং রুপা বিবি ওই যৌনপল্লিতে দেহ ব্যবসা করছিল। ধৃতরা জানিয়েছেন, তারা এ রাজ্যের দিনাজপুর ও মালদহ লাগোয়া বাংলাদেশ সীমান্ত হয়ে ভারতে প্রবেশ করে। তাদের কাছে কোনও পাসপোর্ট, ভিসা বা কোনও বৈধ কাগজপত্র ছিল না। ধৃতদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা রুজু করে পুলিশ তাদের সিউড়ী আদালতে তুললে বিচারক তাদের পুলিশি হেপাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এরা কি ভাবে ভারতে প্রবেশ করলো এবং সিউড়ী পৌঁছে গেল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে এরা সরাসরি কার মাধ্যমে সিউড়ীর যৌনপল্লিতে এসে উঠলো তা বেশ ভাবিয়ে তুলেছে পুলিশকে। কেননা, সিউড়ীর এই যৌনপল্লিতে প্রবেশ করতে হলে কারও না কারও হাত ধরে এখানে পৌঁছাতে হয়। এই যৌনপল্লিকে কেন্দ্র করে কোও আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্র কাজ করছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এদিকে বর্ধমানে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের সাথে বাংলাদেশের যে যোগ তার সাথে এজেলার নামও জড়িয়ে গিয়েছে। তাই সিউড়ীর যৌনপল্লিতে এসে দুই বাংলাদেশীর ঘর বাঁধা এবং সেখানে রীতিমতো দেহ ব্যবসা ফেঁদে বসাটা যে খুব একটা সহজ কাজ নয়, তা-ও মনে করছেন অনেকেই। কার হাত ধরে এরা এই যৌনপল্লিতে এসে পৌঁছালো সেটাই এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
সিউড়ী রেল স্টেশন সংলগ্ন এই যৌনপল্লিতে যাঁরা দেহ ব্যবসা করেন এবং এঁদের যাঁরা নিয়ন্ত্রণ করেন তাঁদের শিকড় যে অনেক গভীরে তার প্রমাণ ইতিপূর্বে নানান ঘটনার মধ্য দিয়ে পাওয়া গিয়েছে। রেল স্টেশন সংলগ্ন এই যৌনপল্লি উঠিয়ে দেবার কথা রেলের পক্ষ থেকে বার বার বলা হলেও, তা কিন্তু সম্ভব হয়নি। লালুপ্রসাদ যাদব কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন সিউড়ী রেল স্টেশনে আসেন একটি সরকারী অনুষ্ঠানে। সে সময় এখানকার যৌনপল্লি সরিয়ে দেবা জন্য রেলের পক্ষ থেকে নোটিশ জারি করা হয়। যৌনকর্মীদের ঝুপড়িগুলিতে সেই নোটিশ ঝুলিয়েও দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে রেল কতৃপক্ষ আর অগ্রসর হতে পারেনি। এমনকি রেলমন্ত্রীর অনুষ্ঠান মঞ্চই অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায় রেল কতৃপক্ষ। শতাব্দী রায় এখানকার সাংসদ নির্বাচিত হবার পরে রেলের কমিটিতেও আসেন। সে সময় তিনি সিউড়ী রেল স্টেশন সৌন্দযকরণ কর্মসূচীর কথা ঘোষণা করেন। সেই কর্মসূচী রূপায়নের জন্য এখানকার যৌনপল্লির বাসিন্দাদের একটি নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে অন্যত্র সরে যাবার নোটিশ দেওয়া হয়। পূর্বের মতো সেই নোটিশ যৌনপল্লির প্রতিটি ঘরের দেওয়ালে ও দরজায় সাঁটিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এবারও দো যায়, নিদিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও যৌনকর্মীরা তাঁদের স্থানের রয়ে গিয়েছেন। সাংসদ শতাব্দী রায় বা রেল কতৃপক্ষ এনিয়ে পরবর্তীতে আর ‘ টুঁ’ শব্দ করেনি। তাই সহজেই অনুমান করা যায়, এই যৌনপল্লির ক্ষমতার মাথা কতো উঁচুতে আর শিকড় কতো গভীরে আছে। তাই সেই যৌনপল্লি থেকে দুই বাংলাদেশীর গ্রেপ্তারের ঘটনা যে প্রশাসনের কপালে ভাঁজ ফেলার পক্ষে যথেষ্ট তা বলার অপেক্ষা রাখে কি ? ?

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট