December 30, 2014
পঞ্চনদের দেশ পাঞ্জাব।শতদ্রু,রাভি,চেনাব,বিয়াস ও ঝিলম নদীর সহবস্থান।ভারতের উত্তর-পশ্চিম কোলে এই রাজ্যের অবস্থান। পশ্চিমে পাকিস্তান, উত্তরে জম্মু-কাশ্মির, উত্তর-পূর্বে হিমাচল, দক্ষিণে রাজস্থান ও হরিয়ানা।১৫০২ সালে লাহোর থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে জি টি রোডের ধারে এক প্রকান্ড জলাশয় দেখেন শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানক।সেই জলাশয়ের পাড়ে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন এক পবিত্র শহরের।জলাশয়ের নাম রাখেন অমৃত সায়র।তার থেকেই শহরের নাম হয় অমৃতসর।গুরু নানকের স্বপ্নকে সার্থক করেন চতুর্থ শিখগুরু রামদাস।সালটা ছিল ১৫৭৭।আধুনিক এই শহরকে পাঞ্জাবের ‘হার্ট অব দ্য সিটি’ বললে ভুল হয় না।১৫৮৮ সালে শিখ গুরু অর্জুন সিং স্বর্ণ মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।ষষ্ঠ গুরু হরগোবিন্দ সিং-এর সময় ৪০০ কেজি সোনার পাতে মুড়ে ফেলা হয় মন্দিরের উপরিভাগ।সরোবরের নামে হয় হরমন্দির সাহিব।এখানেই থাকে গ্রন্থসাহেব।সারাদিন এখানেই থাকে।সন্ধ্যেয় শোভাযাত্রা সহকারে নিয়ে যাওয়া হয়।সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত খোলা থাকে মন্দির।দিনরাত চলে নামগান।পা ধুয়ে খালি পায়ে মন্দির দর্শন সেরে নেওয়া যায়।মন্দিরে রয়েছে লঙ্গরখানা।মন্দির থেকে খুব কাছেই জালিয়ানওয়ালাবাগ।১৯১৯ সালে ১৩ এপ্রিল রাওলাট আইনের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি চালনার অর্ডার দেন জেনারেল ও’ডায়ার। নির্বিচারে গুলি চালনায় প্রাণ দেন ৩৭৯ জন।আহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। অনেকে ঝাঁপ দেন কুঁয়োতে।দেওয়ালে আজও রয়েছে সেই সব গুলির দাগ। অমৃতসরে জম্মুর বিখ্যাত বৈষ্ণোদেবীর আদলে তৈরী হয়েছে মাতা মন্দির।এখানেই রয়েছে লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির।রয়েছে ওয়াগা বর্ডার। শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে তরণতারণ সরোবরে স্নান করলে শরীরের নানান রোগমুক্তি হয় বলে জনশ্রুতি।অমৃতসরে এলে রামতীর্থের ঋষি বাল্মীকির আশ্রম ও লব কুশের জন্মস্থান দেখে নেওয়া যায়।দেশবিদেশ থেকে প্রায় সারা বছরই পর্যটকরা অমৃতসর বেড়াতে আসেন।রেলপথ ও সড়কপথে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই এখানে আসা যায়।