টয় ট্রেনের যাত্রী পর্যটকদের সংখ্যা। এর জেরেই ‘জয় রাইড’-এর সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে (ডিএইচআর)।
দার্জিলিঙের পাহাড়ি পথে অন্যতম আকর্ষণ এই টয় ট্রেনের যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে কয়েক বছর ধরেই। ডিএইচআর আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, কেবল জয় রাইডই নয়, চাটার্ড কোচের যাত্রী সংখ্যাও গত দু’বছরে প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সে জন্যই দার্জিলিং থেকে টয় ট্রেনের জয় রাইড কার্শিয়াঙ পর্যন্ত সম্প্রসারণের চিন্তা হচ্ছে। ডিএইচআর ডিরেক্টর এম ডি ভুটিয়া বলেন, “গত বছর দু’য়েক ধরেই টয় ট্রেনের যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে। জোরকদমে প্রচার করার জন্য এটা সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া জয় রাইডের সংখ্যা বাড়ার ফলেও অনেক বেশি যাত্রী টয় ট্রেনে চড়ার আনন্দ নিতে পারছেন।”
পর্যটকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা ভেবেই ডিএইচআর কর্তৃপক্ষ চান দার্জিলিং থেকে কার্শিয়াং অবধি নিয়মিত জয় রাইডের ট্রেনটি চালাতে। ডিএইআর-এর ডিরেক্টর এম ডি ভুটিয়া বলেন, “এখন স্টিম ইঞ্জিনের দু’টি কোচের জয় রাইড কেবল ঘুম পর্যন্ত চলে। আমরা কার্শিয়াং পর্যন্ত আরেকটি জয় রাইডের পরিকল্পনা করেছি। রাইডটির নাম দেওয়া হবে রেড পান্ডা।” তিনি জানান, নতুন জয় রাইডের ট্রেনটি দার্জিলিং থেকে কার্শিয়াঙের মধ্যে যাতায়াত করবে। নতুন ট্রেনটিতে উন্নত মানের কোচ ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
ডিএইচআর আধিকারিকেরাই জানাচ্ছেন, জয় রাইডের যাত্রী সংখ্যা যেমন ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চাটার্ড কোচ ভাড়া করে ঘুরতে বেরোনো বিদেশী পর্যটকের সংখ্যাও। ডিএইচ আর সূত্রে দাবি করা হয়েছে, কেবল ফেব্রুয়ারি মাসেই চাটার্ড কোচ ভাড়া করার সংখ্যা অন্তত দশগুণ বেড়েছে।
এই মুহূর্তে, জয় রাইডে টয় ট্রেন দার্জিলিং থেকে ঘুমের মধ্যে চলাচল করে। স্টিম ইঞ্জিনের ট্রেনটি দার্জিলিং থেকে ঘুমের মধ্যে চারবার যাতায়াত করে। এই জয় রাইডের ভাড়া মাথাপিছু ৩৫০ টাকা। পর্যটকদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই জয় রাইডে ট্রেনের সব কোচই ভর্তি থাকে। দু’টি কোচের ট্রেনে কোচের আয়তন অনুযায়ী ১৬ থেকে ২৮ জন যাত্রী প্রত্যেক রাইডে যাতায়াত করতে পারেন। চাটার্ড কোচ হিসেবে জয় রাইডের ট্রেন ভাড়াও নেওয়া যায়। সেক্ষেত্রে ২২,০০০ টাকা দিয়ে সোনাদা বা কার্শিয়াং অবধি ট্রেনটি ভাড়া নিতে পারেন ইচ্ছুক পর্যটকেরা।
দার্জিলিং-কার্শিয়াং রুটে অবশ্য যাত্রিবাহী ট্রেন নিয়মিত যাতায়াত করে। তবে তা চলে ডিজেল ইঞ্জিনে। ডিএইচআর কর্তৃপক্ষ জানান, পর্যটকেরা অবশ্য স্টিম ইঞ্জিনই বেশি পছন্দ করেন। পর্যটকেদের বক্তব্য, এতে ঐতিহ্য ভ্রমণের স্বাদও পাওয়া যায়। পর্যটকদের চাহিদা বেশি বলে ‘রেড পান্ডা’ রাইডে তাতে স্টিম ইঞ্জিনই ব্যবহার করা হবে বলে ডিএইআর-এর ডিরেক্টর এম ডি ভুটিয়া জানান। তাঁর কথায়, “নতুন জয় রাইডের ব্যাপারটা এখনও পরিকল্পনার স্তরেই রয়েছে। তা বাস্তবায়িত হতে কিছুটা সময় লাগবে।”