সংখ্যালঘুর ভিড় ধুলিয়ানের সভায়, উচ্ছ্বসিত বিজেপি


সোমবার,২২/১২/২০১৪
1080

ধুলিয়ান:পাশের নদিয়া, বীরভূমে ভিত শক্ত হচ্ছে অনেক দিন ধরেই। এ বার মুর্শিদাবাদেও নিজেদের শক্তি বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া শুরু করল বিজেপি। রবিবার মুর্শিদাবাদের সংখ্যালঘু প্রভাবিত ধুলিয়ানে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের সভায় সাড়াও মিলল ভাল।

ধুলিয়ান পুরসভার জমিদার বাড়ির মাঠে এ দিনের সভায় যা ভিড় হয়েছিল, তা মাথাগুণতির নিরিখে হয়তো খুব বেশি কিছু নয়। কিন্তু, কংগ্রেসের দুর্গ হিসাবে পরিচিত যে জেলায় বিজেপি এখনও কার্যত দাঁত ফোটাতে পারেনি, সেখানে এ দিনের হাজার চারেক মানুষের ভিড় দেখে উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেননি রাহুল নিজেও। তিনি বলেন, “বীরভূমের সংখ্যালঘুরা বুঝেছেন তৃণমূলের রাজ্য সরকার তাদের ঠকিয়েছে। বাংলাকে অশুভ শক্তি গ্রাস করেছে। এখানের মানুষও বুঝছেন।” তাঁর আরও বক্তব্য, “এই রাজ্য শাসন করেছে কংগ্রেস, সিপিএম এবং তৃণমূল। তা সত্ত্বেও রাজ্যের সংখ্যালঘুরা সব ক্ষেত্রে এত পিছিয়ে কেন? এর উত্তর দেওয়ার দায় নিতে হবে তাদের।”

ধুলিয়ান পুর-এলাকার ৭৪% বাসিন্দাই সংখ্যালঘু। সভায় সংখ্যালঘুদের উপস্থিতি ছিল বেশি। আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূল বা কংগ্রেস থেকে কেউ এ দিন বিজেপি-তে যোগ দেননি। কিন্তু, ভিড়ের মধ্যে তৃণমূলের কিছু পরিচিত কর্মী-সমর্থকের মুখও চোখে পড়েছে। তাঁদেরই অন্যতম, ধুলিয়ানের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইনতাজ মহালদার বলেন, “আমরা বরাবর তৃণমূল করতাম। কিন্তু, ওদের কাজে হতাশ আমরা। তাই পাড়ার সবাই দল বেঁধে বিজেপি-র সভায় এসেছি।” বিজেপি-র মুর্শিদাবাদ উত্তরের সভাপতি ষষ্ঠীচরণ ঘোষ বলেন, “সংখ্যালঘুদের নিয়ে এত বড় সভা বিজেপি কখনও করতে পারেনি ধুলিয়ানে। বাম ও তৃণমূল ভেঙেই মানুষের এই ঢল। যে সাড়া মিলেছে, তাতে আমরা খুশি।”

আজ, সোমবার সাগরদিঘিতে সভা করার কথা রাহুলের। সেখানে ভিড় অনেক বেশি হবে বলে আশা করছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এই সভাকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। দলের জেলা সভাপতি মান্নান হোসেন বলেন, “সভা দেখে ভোট হয় না। বিজেপি-র হাতে দাঙ্গার যে রক্ত লেগে আছে, তাতে এই জেলার মানুষ ওদের কোনও দিন বিশ্বাস করবে না!” ধুলিয়ান ব্লক তৃণমূলের সভাপতি কাওসর আলির কটাক্ষ, “হাজার কয়েক লোকের ভিড়ে এত উচ্ছ্বাসের কী আছে, বুঝতে পারছি না!”জেলা কংগ্রেসের নেতা অশোক দাস বলেন, “সভায় লোক হয়েছে মানেই তারা সবাই বিজেপি করছে, এমনটা মনে করার কারণ নেই। সংখ্যালঘুরা আমাদের সঙ্গেই আছেন।” দলের ব্লক সভাপতি আমিরুল ইসলাম বলেন, “বহিরাগত কিছু লোক এনে সভা করেছে ওরা। এতে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই।”

রাহুলও বিলক্ষণ জানেন, এই জেলায় তৃণমূলের চেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস। তাই সভায় কংগ্রেস-তৃণমূলকে একযোগে আক্রমণ করেন তিনি। রাহুলের অভিযোগ, “সারদার কয়েক হাজার কোটি টাকা তৃণমূলের নেতারা যেমন লুটেপুটে খেয়েছেন, তেমনই খেয়েছেন সিপিএম ও কংগ্রেসের নেতারাও।” মমতার দিল্লিযাত্রাকে কটাক্ষ করে রাহুল বলেন, “যেচে নৈশভোজে নেমন্তন্ন নিলেন উনি। উদ্দেশ্য একটাই, মোদীজিকে মুখ দেখানো। কিন্তু দিদি শুনে রাখুন। ও-সব করে লাভ নেই। বাংলার বিজেপি আর দিল্লির বিজেপি এক সূত্রে বাঁধা। ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়ার চেষ্টা করবেন না! তাতে সারদা থেকে পার পাবেন না!”

বছর তিনেক আগে মুর্শিদাবাদের আহিরণে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস তৈরির তীব্র বিরোধিতা করেছিল বিজেপি। এ দিন সভার পরে সাংবাদিক বৈঠকে সেই প্রসঙ্গ উঠলে রাহুল দাবি করেন, “ওই জমি নেওয়া হয়েছে স্থানীয় কৃষকদের ঠকিয়ে। তাঁদের জমি ফেরত দিতে হবে। এই দাবি থেকে সরে আসার প্রশ্নই নেই। কেন্দ্রের কাছে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছি।”

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট